ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে দ্বিতীয় প্রমাণ।



   কি সামান্য বিষয়,কি শারিরীক ব্যাপার,কি জ্যোতিঃশাস্ত্র- সম্বন্ধীয় ঘটনা,কি অন্যবিধ বৈজ্ঞানিক-তত্ত্ব, যে বিষয়ের যখন অনুশীলন কর না কেন, দেখিতে পাইবে যে, মনুষ্য যথাশক্তি বহুবিধ কারণ -পরম্পরা প্রদর্শন করিতে করিতে অবশেষে আর কারণ প্রদর্শনে সমর্থ থাকেনা। তখন সে শেষকারণ বলিয়া কোন‌ও পরাশক্তিকে কিংবা অনন্তশক্তি-সম্পন্ন কোন‌ও অজ্ঞেয় মহত্তমকে মনে করিতে বাধ্য হয়। এই পরমাশক্তি বা এই অনন্ত শক্তিসম্পন্ন‌ই ঈশ্বর। মনে কর প্রাতঃকালে দূর্ব্বাদলের উপরিভাগে মুক্তার ন্যায় শিশির বিন্দুসমূহ দেখিতে পাইয়া তুমি চিন্তা করিতে প্রবৃত্ত হ‌ইলে যে, ঐ শিশির -কণাগুলি কেন গোলাকার হ‌ইল? ইহার উত্তরে বিজ্ঞানবিৎ তোমাকে বলিবেন যে, সংহতি প্রভাবে ঐরূপ হ‌ইয়াছে। মানিলাম, সংহতিপ্রভাবে‌ই যেন ঐরূপ হ‌ইল। কিন্তু ঐ সংহতিশক্তি কেন হ‌ইল, কে প্রদান করিল ইত্যাদি রূপ চিন্তা করিতে গেলে শেষে এক অদ্বিতীয় শক্তিমানকেই উহার কারণ বলিয়া নির্দ্দেশ করিতে হ‌ইবে। নতুবা আর কোন‌ও উপায় নাই। যদি বল, স্বয়ং ঐরূপ শক্তি যুক্ত হ‌ইয়াছে। ইহার উত্তরে বলা যাইতে পারে যে, এরূপ উক্তি উন্মত্তবচনৎ অশ্রদ্ধেয়। কেন না, মূলশক্তি স্বীকার না করিলে সকল পদার্থেই অপূর্বশক্তি স্বীকার করিতে হয়। আর সর্বত্র সবিশেষ শক্তি স্বীকৃত হ‌ইলে, কেহ ছোট,কেহ বড় হ‌ইবে কেন? তুমি কেন ব্যাস, বশিষ্ঠ, গৌতম, কণাদের ন্যায় বা ধ্রুব,শুক, প্রহ্লাদ প্রভৃতির ন্যায় হ‌ও নাই? আর‌ও দেখ, বিচারের প্রণালীর ইহাই উৎকৃষ্ট নিয়ম যে,বহু কল্পনা অপেক্ষা অল্প কল্পনা গরীয়সী। যদি তুমি প্রত্যেক বিষয়ে সবিশেষ শক্তি-স্ব স্ব প্রকৃতি বলিয়া কল্পনা কর, তবে তোমার বহুকল্পনা হ‌ইবে। আর যদি ঐরূপ সর্ব্বত্র ঈশ্বরেচ্ছাশক্তি স্বীকার কর, তবে বহু কল্পনার হস্ত হ‌ইতেও যেমন পরিত্রাণ পাইবে, আপনার হৃদয়ের নিকটেও তদ্রুপ অনুকূলবাদিতাবশতঃ শান্তিলাভে বঞ্চিত হ‌ইবে না। অত‌এব যে কোনও বিষয়ের যত কারণ‌ই হ‌উক না কেন, অবশেষে কোনও মহিষ্ঠ গরিষ্ঠ সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিকেই উহার মূল কারণ বলিতে হ‌ইবে। উল্লিখিত শক্তিই ঈশ্বর।অত‌এব সপ্রমাণ হ‌ইল যে,
  ঈশ্বরোহস্তি,ঈশ্বরোহস্তি,ঈশ্বরোহস্তি।