উদ্ভিদ-সৃষ্টি

      তেজের বিকারে যখন তোয় এবং তোয়ের বিকারে যখন ভূমির উৎপত্তি হয়, তখনই তত্তৎ পদার্থে পরম পুরুষের ইচ্ছানুসারে বিবিধ উদ্ভিদ ও জীবের নানা জাতীয় বীজ নিহিত হয়। এই উদ্ভিদ-বীজ হ‌ইতেই উদ্ভিদ উৎপন্ন হ‌ইয়াছে ও হ‌ইতেছে। অধিকন্তু উদ্ভিদের উৎপত্তির পরে উহাতে বীজাদি উৎপন্ন হ‌ইলে, তাহা হ‌ইতেও উদ্ভিদ সঞ্জাত হ‌ইতেছে। ফলত: উদ্ভিদ‌ ও জীব প্রায় এক নিয়মেই উৎপন্ন।



 কেননা, বহুসংখ্যক উদ্ভিদে পরাগ কেশরের রেনু ,গর্ভকেশরে অবস্থিত তরল পদার্থে পতিত হ‌ইয়া বীজকোষের উৎপাদিকা শক্তি উৎপাদন করে। সাধারণতঃ জীবগণের উৎপত্তি ও এই নিয়মে হয়। আর কতকগুলি উদ্ভিদের কাণ্ড প্রভৃতি কাটিয়া মৃত্তিকায় রোপণ করিলেও উদ্ভিদ উৎপন্ন হ‌ইয়া থাকে। জীবের মধ্যে ও পুরুভুজ নামক জীবকে কর্ত্তন পূর্বক যত খণ্ড করা যায়, তৎসমুদায়ের প্রতিখণ্ড হ‌ইতেই এক এক পুরুভূজ উৎপন্ন হয়। অপর  কোনও কোনও উদ্ভিদের এক‌ই পুষ্পে পরাগকেশর ও গর্ভকেশর থাকে, আর অবশিষ্ট গুলির সেরূপ নহে।



 কতকগুলি পুষ্প আছে যাহাতে কেবল গর্ভকেশর ও বীজকোষ থাকে। আর কতকগুলি পুষ্পে কেবল পরাগকেশর থাকে। অনন্তর বায়ুপ্রবাহে বা মধুলুব্ধ ভৃঙ্গগণের গমণাগমণে এক পুষ্পের পরাগকেশর অন্য পুষ্পের গর্ভকেশরে পতিত হ‌ইয়া বীজকোষের উৎপাদিকা শক্তি সম্পাদন করে। জীবগণের পক্ষে শেষোক্ত উপায়‌ই সতত লক্ষিত হয় অচিন্তশক্তি পরাৎপর পরমপুরুষের যে কতপ্রকার‌ই অত্যাশ্চর্য্য কার্য্য ভক্ত হৃদয়ে ভক্তি প্রবাহ বদ্ধিত করে, তাহার ইয়ত্তা করা মানবের অসাধ্য।

             - ঈশ্বর গুরুনাথ।