ব্রহ্মচর্য্য

ঊর্দ্ধরেতা হওয়াকে এবং মনেও কোন প্রকার রমণীবিষয়ক কুচিন্তা না করাকে ব্রহ্মচর্য্য কহে ব্রহ্মচর্য্য প্রভাবে বীর্য্যলাভ হয়। যিনি ব্রহ্মচর্য্য সম্পন্ন হয়, তাঁহার শরীর ও মনে বলবতী শক্তি জন্মে। ব্রহ্মচর্য্য না করিলে কখন‌ই মানব কোন‌ও মহৎকর্ম্মে সিদ্ধমনোরথ হ‌ইতে পারে না। মহাত্মা মনু ব্রহ্মচর্য্য সম্বন্ধে যাহা লিখিয়াছেন,তাহা নিম্নে প্রকাশিত হ‌ইল। অর্থাৎ ব্রহ্মচারী গুরুগৃহে বাস ও ইন্দ্রিয় সংযম করিয়া স্বীয় তপোবৃদ্ধির নিমিত্ত বক্ষ্যমাণ নিয়মসমূহ অবলম্বন করিবেন। তিনি মধু (মৌ বা মদ্য ), মাংস, কর্পূর চন্দন কস্তূরিকাদি গন্ধদ্রব্য,মাল্য(ফুলের মালা),উগ্ৰরস গুড়, প্রভৃতি , স্ত্রী সংসর্গ , যাবতীয় শুক্ত এবং প্রাণিহিংসা পরিত্যাগ করিবেন।আর অভ্যঙ্গ (তৈলাদিদ্বারা মস্তক হ‌ইতে আরম্ভ করিয়া সমস্ত শরীরে তৈল মর্দ্দন), চক্ষুদ্বয়ে অঞ্জন ধারণ চর্ম্ম পাদুকা ও ছত্রধারণ , কাম, ক্রোধ, লোভ এবং নৃত্য,গীত ও বাধ্য পরিত্যাগ করিবেন।অক্ষক্রীড়া , নিরর্থক বাককলহ, পরের দোষ কীর্ত্তন, মিথ্যা কথন, মৈথুনেচ্ছায় স্ত্রীলোকের প্রতি সানুরাগ দৃষ্টিপাত ও তাহাদিগকে আলিঙ্গন করা এবং পরের উপকার সাধন করিবেন না। তিনি একাকী শয়ন করিবেন এবং কখনো কোথায় রেতঃস্খলন করিবেন না।কারণ ইচ্ছাপূর্বক শুক্রপাতন করিলে স্বাবলম্ব্য ব্রত ভঙ্গ হ‌ইবে। ব্রহ্মচারী দ্বিজের অনিচ্ছায় যদি স্বপ্নাবস্থায় রেতঃপাত হয়,তবে তিনি স্নান করিয়া সূর্যের অর্চনাপূর্বক "পুনর্মামেতু ইন্দ্রিয়ং" এই ঋক জপ করিবেন (নিরাকারবাদিগণ সূর্য্যের পূজা না করিয়া স্বীয় বীজ অন্যূন বিংশতি বার জপ করিয়া "আমার ইন্দ্রিয় শক্তি পুনরায় পূর্ব্ববৎ হ‌উক " বলিয়া প্রার্থনা করিবেন।) মূল কথা ব্রহ্মচর্য্য সময়ে মাদক দ্রব্য,বিলাসোপকরণ ও মৎস্য-মাংসাদি পরিত্যাগ করা বিধেয়। এবং যাহাতে শরীর ও মনঃ ক্লেশ সহিষ্ণু হয় তজ্জ্ন্য সবিশেষ চেষ্টা করা কর্ত্তব্য।