ওঁং
     ❤️ প্রেমের উৎপত্তি কি প্রকারে হয় ?❤️

              সম্পূর্ণ বা আংশিক সাদৃশ্য অনুপাতীয়ের প্রাপ্তি হ‌ইলে, যথাক্রমে স্বভাবতঃ, বা মমতা ও স্বাধীন ইচ্ছার পরিচালনা দ্বারা, প্রেমের উৎপত্তি হ‌ইয়া থাকে ; অর্থাৎ সম্পূর্ণ সাদৃশ্য অনুপাতীয়ের বা সমান অনুপাতীয়ের লাভ হ‌ইলে, আত্মার প্রকৃত স্বভাব অনুসারে প্রেমের উৎপত্তি হয়। প্রেমের প্রকৃত অবস্থা আধ্যাত্মিক, অর্থাৎ, ইহা আত্মা হ‌ইতে উৎপন্ন হয়। ভালবাসার সমুন্নত পরিণতিকে যে প্রেম কহে, ইহা  পৃথিবীতে প্রকাশিত নাই। অর্থাৎ, ইহা পার্থিব লোকের হ্নদয়ে প্রকৃতরূপে অনুভূত হয় না। এ জন্যই উহাকে আধ্যাত্মিক বলিয়া নির্দ্দেশ করা আবশ্যক। সমানুপাতীয় দুই ব্যক্তির (যেমন স্ত্রী ও পুরুষের ) ধর্ম্ম এই যে, তাহাদিগের প্রকৃতি একরূপ হ‌ইবে, তাহারা একরূপ কার্য্যকে আনন্দদায়ক কিংবা দুঃখপ্রদ বোধ করিবে, একরূপ লোককে ভালবাসিবে এবং একভাবে জীবনযাপন করিতে বাসনা করিবে, সুতরাং তাহাদিগের প্রকৃতির সামঞ্জস্য ও কার্য্যের একরূপতাপ্রযুক্ত তাহারা পরস্পর পরস্পরের ভালবাসিবে এবং ভালবাসা কোন কঠোর ব্যঘাতে ছিন্ন না হ‌ইলেই তাহাদিগের পরস্পরের প্রতি পরস্পরের প্রেম সঞ্চার হ‌ইবে। আর, আংশীক সাদৃশ্যের -অনুপাতীয়ের স্থলে মমতা দ্বারা প্রথমে প্রেমের আংশিক উৎপত্তি হয়, পরে স্বাধীন ও বিশুদ্ধ ইচ্ছার পরিচালনা দ্বারা স্বার্থপরতা বিনাশিত হ‌ইলে সম্পূর্ণরূপে প্রেমের উৎপত্তি হ‌ইয়া থাকে। এইরূপেই প্রেমের উৎপত্তি হ‌ইতে পারে বটে, কিন্তু ২য় অনুচ্ছেদে উহার যে সকল ব্যাঘাতকর বিষয়ের উল্লেখ করা হ‌ইয়াছে, তৎসমুদায় দূরীভূত না হ‌ইলে কেবল প্রেমের ভাজনকে পাইলে প্রেমোৎপত্তি  হ‌ইতে  পারে না।



                অপিচ, প্রেমের উৎপত্তি কিরূপে হয় ? এই মহান প্রশ্নের উত্তরে ইহা অবশ্যই বক্তব্য যে, যেমন কোন দোষ বা অন্য গুণ কিংবা শারীরিক পদার্থ (লোম, নখ, বা ব্রণ দদ্রু প্রভৃতি) উৎপন্ন হ‌ইবার সময়ে উহার অনুভব হয় না, কিন্তু স্থিতিকালে উহা প্রতীয়মান হ‌ইয়া থাকে, তদ্রুপ উৎপত্তি সময়েও প্রেম যে কিরূপে উৎপন্ন হ‌ইতেছে, তাহা বুঝা যায় না বটে, কিন্তু স্থিতিকালে ঐ উৎপত্তির প্রকার কিছু কিছু বুঝা যায়। এ বিষয়ে সুস্পষ্টরূপে অন্যকে বুঝাইয়া দেওয়া দূরে থাকুক, নিজেই ধারণা করিতে পারা যায় না। কেননা, যাহাকে ভালবাসি, তাহাকে একবার দেখিতেই হ‌ইবে, অন্ততঃ তাহার কোন চিহ্ন বা বাসস্থান না দেখিলে কোন‌ও মতে হ‌ইবে না; কিংবা সে, যে কার্য্য করিতে ভালবাসে, যাহা দেখিয়া সন্তোষ লাভ করে, যাহা শুনিয়া আনন্দিত হয়, ইত্যাদি তাহা করিয়া, দেখিয়া কিংবা শুনিয়া একবার বাসনা পূর্ণ করিতেই হ‌ইবে। এইরূপেই ভালবাসা হ‌ইতে অজ্ঞাতসারে বা ঈষৎ বিদিতরূপে প্রেমের উৎপত্তি হ‌ইয়া থাকে। এই উৎপত্তিই সুখশান্তিময় স্বর্গরাজ্যের প্রথম সোপান, সন্দেহ নাই।

           এতদ্ভিন্ন যে যে উপায়ে প্রেমের উৎপত্তি হয়, তাহা প্রেমবৃদ্ধির প্রস্তাবে বিস্তারিতরূপে নির্দ্দিষ্ট হ‌ইবে; কারণ, এখানে নির্দেশ করিলে, পৌনরুক্ত্য দোষ অপরিহার্য্য হ‌ইয়া উঠে।     
                               - বিশ্বময়ী দেবী।