সৃষ্টির স্থূল বৃত্তান্ত।

   

সৃষ্টির স্থৃল বৃওান্ত:- 
প্রথমে পরম পুরুষের যে বিবংহয়িষা অর্থাৎ আত্মাকে বহুকরিবার যে ইচ্ছা উৎপন্ন হইল, তাহার সহিত পরমপুরুষের সহযোগে অব্যক্তের উৎপত্তি হয়। অব্যক্ত অর্থাৎ অসীম নিরাকারত্ব ও অসীম সাকারত্ব _ এই উভয়ের একত্ব। অব্যক্তের সহিত পরম পুরুষের যোগে (৩১) ব্যোম অর্থাৎ আকাশের উৎপত্তি হয়। পরে পরম পুরুষের যোগে ঐ আকাশ হইতে ‌বায়ু , বায়ু হইতে তেজঃ তেজ হইতে অপ এবং অপ হইতে ক্ষিতি উৎপন্ন হয়। এই পঞ্চভূত পঞ্চীকৃত হইয়া সমস্ত চেতন অংশের শরীর উৎপাদন করে। 
প্রতি শরীরে পরমাত্মার চৈতন্যাংশের সংযোগে বৃক্ষ-লতা, গুল্মাদি, কীট, পতঙ্গ, পক্ষ্যাদি এবং সর্বশেষে নর-জাতি উৎপন্ন হয়। এইরূপে দৃশ্যমান সৃষ্টি হইয়াছে।
এতদ্বিয়ের অন্যান্য বিবরণ পূর্বে উক্ত হইয়াছে বলিয়া এস্থলে  আর পুনরুল্লেখ করা গেল না। কেবল সংক্ষেপে ‌তংসমুদায় নির্দিষ্ট হইল।


গুণের পরীচিক্ষিষা :- 
সৃষ্টি- প্রকরণের প্রথমে লিখিত হইয়াছে যে পরম পুরুষের বিবংহয়িষা  বা অনন্তগুণের পরীচিক্ষিষা হইল। ঐ উভয়ই যে প্রকৃতপক্ষে এক, তাহা এক্ষণে লিখিত হইতেছে। অনন্তগুণের পরীচিক্ষিষা অর্থাৎ পরীক্ষা করিতে ইচ্ছা। আমার যে অনন্তগুণ আছে ইহাদের মধ্যে কোনটির কিরুপ শক্তি,ইহা পরীক্ষা করাই সৃষ্টি। একারণ সমস্ত অংশেই অনন্তগুণ অত্যল্পপরিমাণে এবং কেবল কোনও একটি গুণ অধিক পরিমাণে প্রদান করা হইয়াছে। যেমন কাহাকেও প্রেমগুণ, কাহাকেও নির্ভরতা এবং কাহাকেও জ্ঞান ইত্যাদি অধিকরূপে দেওয়া হইয়াছে। ঐরূপ গুণসম্পন্ন ঐ সকল অংশের মধ্যে কে কিরূপ তাঁহাকে তন্ময় হইতে পারে, ইহাই পরীক্ষা এবং এই পরীক্ষা এবং এই জন্যই সৃষ্টি। মূলকথা, এই পরীক্ষা বা সৃষ্টি-ব্যাপার লীলাময়ের লীলা মাত্র। যে স্থানে সাধক এই মহতী লীলা মর্মবোধ করিয়া প্রযত্ন সহকারে তন্ময়তা লাভ করিতে পারেন, সেই মহিষ্ঠ মহাত্মাই এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া, অনন্ত প্রেমানন্দ পারাবারে ও অনন্ত জ্ঞানানন্দসাগরে নিমগ্ন হইয়া চরিতার্থ হইতে পারেন। হে পরমাত্নন্।এই শুভ দিন এই পাপপূর্ণ জগতে কবে প্রকাশিত হইবে ? হে নাথ ! তোমার সবিশেষ করুণাদান ব্যতিরেকে গুহাতমোনিবাসী জীবের পক্ষে জ্ঞান প্রেমানন্দ সূর্য- দর্শন একান্ত অসম্ভব বলিয়াই প্রতীয়মান হয়। দয়াময়! দয়াকর